🕋 কোরবানির ইতিহাস, গুরুত্ব ও পালন-পদ্ধতি | ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা
কোরবানি ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ঈদুল আজহার মূল অনুষঙ্গ। কোরবানি শব্দটি এসেছে আরবি "قربان" (কুরবান) থেকে, যার অর্থ নৈকট্য বা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ। মূলত এই ইবাদতের মাধ্যমে মুমিন বান্দা আল্লাহর প্রতি তাঁর আনুগত্য এবং ত্যাগের প্রতীক স্বরূপ পশু কোরবানি করে থাকে।

📜 ইতিহাসের পেছনের গল্প
কোরবানির সূচনা ঘটে হজরত আদম (আ.)-এর পুত্র হাবিল ও কাবিলের কাহিনী থেকে, যেখানে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করেন। তবে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য মেলে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর কাহিনিতে। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদেশ পান পুত্রকে কোরবানি দিতে। তিনি সেই নির্দেশ পালনের জন্য প্রস্তুত হন এবং ইসমাইল (আ.)-ও আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে উৎসর্গ করতে রাজি হন। এই আনুগত্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইসমাইল (আ.)-এর স্থলে আল্লাহ একটি দুম্বা পাঠিয়ে দেন কোরবানির জন্য।
🕰️ কোরবানির সময়সীমা ও নিয়ম
জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদের নামাজের পর থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করা যায়। ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না।
🐄 কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য পশু
- উট: ৫ বছর পূর্ণ
- গরু/মহিষ: ২ বছর পূর্ণ
- ছাগল/ভেড়া: ১ বছর পূর্ণ
পশুটি অবশ্যই সুস্থ, দৃষ্টিহীন বা পঙ্গু নয় এমন হতে হবে।
🧍 কারা কোরবানি করতে পারবে?
যে মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী এবং নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, তার উপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি পুরুষ ও নারীর জন্যই প্রযোজ্য।
✂️ কোরবানির পদ্ধতি
- কোরবানি করার আগে নিয়ত করতে হবে।
- পশু জবাই করার সময় “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলা সুন্নত।
- সামর্থ্য থাকলে নিজ হাতে জবাই করা উত্তম।
- পশুর প্রতি দয়া ও নম্রতা প্রদর্শন করতে হবে।
🍖 মাংস বণ্টনের নিয়ম
- ১/৩ অংশ নিজের পরিবারের জন্য
- ১/৩ অংশ আত্মীয় ও বন্ধুদের জন্য
- ১/৩ অংশ গরিব-মিসকিনদের জন্য
✅ শেষকথা
কোরবানি কেবল একটি পশু জবাইয়ের নাম নয়; এটি আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, ত্যাগ ও ভালোবাসার নিদর্শন। আমাদের উচিত অন্তর থেকে কোরবানির মাহাত্ম্য অনুধাবন করে তা পালন করা।
তথ্যসূত্র: Unique News 1st
,ইসলামি বিশ্ব, ইসলামি বিশ্বকোশ